নিজস্ব প্রতিবেদক, চলমান সময়
প্রহসনের নির্বাচন আয়োজন ও অন্যায় প্রভাব খাটানোর অভিযোগে রাজধানীর শেরে বাংলা থানায় দায়ের করা মামলায় সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল এবং কে এম নূরুল হুদার ১০ দিনের রিমান্ড চেয়েছে পুলিশ।
বৃহস্পতিবার মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও শেরেবাংলা নগর থানার উপ-পরিদর্শক শামসুজ্জোহা সরকার এ আবেদন করেন। এ বিষয়ে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে শুনানি হবে। আদালতে প্রসিকিউশন বিভাগের উপ-পরিদর্শক রফিকুল ইসলাম ইসলাম এ তথ্য জানিয়েছেন।
যেসব কারণে রিমান্ড চাওয়া হয়েছে-
১. গ্রেপ্তার হওয়া আসামি ২০১৮ সালের একাদশ জাতীয় সংসদ নিবার্চনকালে বাংলাদেশের প্রধান নির্বাচন কমিশনার হিসেবে নিযুক্ত ছিলেন। কিন্তু তিনি সেই নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে অন্তর্ভুক্তিমূলক সম্পন্ন করতে পারেন নাই এবং দেশকে গভীর সংকটের মধ্যে নিমজ্জিত করেছেন।
২. প্রশাসনকে একটি পক্ষে ব্যবহার করেছেন। যাতে করে সংবিধান অমান্য করেছেন এবং শপথ ঠিক রাখতে পারেন নাই।
৩. দণ্ডবিধি আইনের ১৭১-ক ধারার সংজ্ঞা মতে নির্বাচনের ছদ্মবেশ ধারণ করিয়া দিনের ভোট রাতে সম্পাদন করার নিমিত্তে সংশ্লিষ্ট সরকারি প্রতিষ্ঠানকে বাধা দিয়ে নির্বাচন সম্পন্ন করেন। সে নির্বাচন বডির প্রধান ব্যক্তি ছিলেন। তিনি অন্যান্য কমিশনার এবং বিভাগীয় ও জেলা, উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তাদের পরিচালনার দায়িত্বে ছিলেন।
৪. ষড়যন্ত্রমূলকভাবে সরকারি আদেশ, সাংবিধানিক ক্ষমতা হ্রাস, দেশের জনগণের ভোটাধিকার লঙ্ঘন করেছেন। তরুণ সমাজের ভোট বিমুখ, ভাবমূর্তি নষ্ট করেছেন।
৫. আসামি ২০১৮ সালের একাদশ জাতীয় নির্বাচনে প্রধান নির্বাচন কমিশনার থাকাবস্থায় কার পরামর্শে ও সহযোগিতায় ভোটকেন্দ্রে নিয়োজিতদের দিয়ে দিনের ভোট রাতে সম্পন্ন করে মিথ্যা বিবৃতির মাধ্যমে একটি দলকে বিজয়ী ঘোষণা করেন এবং মিথ্যা গেজেট প্রকাশ ও বাস্তবায়ন করেন।
৬. তিনি প্রধান নির্বাচন কমিশনার হিসেবে দায়িত্বে থাকা অবস্থায় ২০১৮ সালের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে একটি দলকে বিজয়ী ঘোষণা করার লক্ষ্যে জনগণের ভোটাধিকার হরণ করে প্রহসনমূলক নির্বাচন ব্যবস্থা গ্রহণ করে কত টাকা ঘুষ গ্রহণ করেছেন তা উদঘাটন। যাতে করে কোটি কোটি নতুন প্রজন্মের ভোটাররা ভোট দিতে পারেন নাই। তাতে দেশে স্বৈরাচারের বীজ বপন করা হয়েছিল।
৭. নির্বাচন কমিশন একটি স্বাধীন ও সংবিধানিক প্রতিষ্ঠান হওয়া স্বত্ত্বেও গ্রেপ্তার আসামি সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার এ কে এম নুরুল হুদা কার ইন্ধনে ও কী স্বার্থে ২০১৮ সালের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সম্পূর্ণভাবে জনগণকে তাদের ভোটের অধিকার থেকে বঞ্চিত করেছে।
৮. গ্রেপ্তার আসামি একজন ফ্যাসিবাদী বডির মূল নায়ক। তার কাছ থেকে পাতানো নির্বাচনের কৌশল ও জড়িতদের উদঘাটন করা দরকার।
৯. গ্রেপ্তার আসামি কোন কোন সংসদ আমলে কার কার কাছ থেকে কত টাকা ঘুষ গ্রহণ ও ফলাফল পরিবর্তন করে গেজেটে সাজানো ভোটের ফলাফল প্রকাশ করেছেন তার তথ্য উদঘাটন করা দরকার।
১০. এজাহারনামীয় পলাতক ও অজ্ঞাতনামা আসামিদের নাম ঠিকানা সংগ্রহ ও গ্রেপ্তার।
১১. মামলার মূল রহস্য উদঘাটন।
আওয়ামী লীগ আমলে অনুষ্ঠিত তিনটি জাতীয় নির্বাচনে অনিয়ম-কারচুপির অভিযোগে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক তিন প্রধান নির্বাচন কমিশনারকে আসামি করে মামলা করেছে বিএনপি। মামলায় মোট ২৪ জনকে আসামি করা হয়েছে। গত রবিবার বেলা সোয়া ১১টার দিকে রাজধানীর শেরেবাংলা নগর থানায় বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য মো. সালাহউদ্দিন খান বাদী হয়ে এ মামলা করেন।
চলমান সময়/২৬জুন/পিএস