আফগানিস্তানের সুপারিচিত একজন সাংবাদিক ও মানবাধিকারকর্মী বিসমিল্লাহ আদিল আইমাককে গুলি করে হত্যা করেছে অজ্ঞাত বন্দুকধারীরা। এ নিয়ে দেশটিতে গত দুই মাসে কমপক্ষে ৫ জন সাংবাদিককে হত্যা করা হলো। রিপোর্টার্স উইদাউট বর্ডার্স বলেছে, কয়েক মাস আগেও কমপক্ষে একবার হামলা থেকে বেঁচে গিয়েছেন আইমাক। তবে শুক্রবারের হামলা তার প্রাণ কেড়ে নিয়েছে। এ খবর দিয়ে বার্তা সংস্থা এপি এবং অনলাইন বিবিসি বলছে, কাছেই গ্রামের বাড়ি থেকে তিনি এদিন শহরে ফিরছিলেন। এ সময় প্রাদেশিক রাজধানী ঘোর-এর ফিরোজ কোহ সড়কের কাছে তার গাড়িতে গুলি চালায় অস্ত্রধারীরা। প্রাদেশিক সরকারের মুখপাত্র আরিফ আবিরের মতে, তার গাড়িতে আইমাকের এক ভাইসহ অন্যরা ছিলেন। তবে তাদের কোন ক্ষতি হয়নি।আইমাক ছিলেন স্থানীয় রেডিও স্টেশন সাদা-ই-ঘোর এর প্রধান। একই সঙ্গে তার প্রদেশে তিনি মানবাধিকার নিয়ে কাজ করছিলেন। ওদিকে তাকে হত্যার পর কোনো পক্ষই এর দায় স্বীকার করেনি। তালেবান মুখপাত্র জাবিহুল্লাহ মুজাহিদ বলেছেন, এ ঘটনার সঙ্গে তাদের কোনো সম্পর্ক নেই।
আফগানিস্তানে মানবাধিকারের কর্মী ও সরকারপন্থি ব্যক্তিরা নতুন করে টার্গেটে পরিণত হয়েছেন। এমন প্রবণতা উদ্বেগজনক বলে মন্তব্য করেছে বিবিসি। এতে আরো বলা হয়েছে, এসব হত্যাকাণ্ডের অনেকগুলোই কোনো মিলিট্যান্ট গ্রুপ স্বীকার করে না। কিন্তু সরকারি কর্মকর্তারা এর জন্য দায়ী করে থাকেন তালেবানদের। এমন হত্যাকাণ্ডের নিন্দা জানানো হয়েছে জাতিসংঘ, ন্যাটো এবং ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন থেকে। আগামী সপ্তাহে তালেবান ও আফগান সরকারের মধ্যে নতুন করে আলোচনা শুরুর কথা রয়েছে। এই আলোচনা চলার মধ্যেও সেখানে সহিংসতা অব্যাহত রয়েছে। প্রাথমিক ইস্যুতে উভয় পক্ষই কিছুটা অগ্রগতি করেছে। কিন্তু এখনও যুদ্ধবিরতি অথবা ক্ষমতা ভাগাভাগি নিয়ে আলোচনা শুরু হয়নি।
আইমাসসহ গত দু’মাসে যাদেরকে হত্যা করা হয়েছে তারা হলেন গজনি জার্নালিস্ট ইউনিয়নের প্রধান রহমতুল্লাহ নেকজাদ। তাকে গত মাসে শহরের পূর্বাঞ্চলে বাড়ির কাছে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। এর কয়েকদিন আগে এনিকাস টিভি এবং রেডিও একজন সাংবাদিক মালালা মাইওয়ান্ডকে কাজে যাওয়ার পথে তার গাড়িতে গুলি করে হত্যা করে অজ্ঞাত বন্দুকধারীরা। নভেম্বরে সুপরিচিত টেলিভিশন উপস্থাপক ইয়ামা সাইওয়াশকে হত্যা করা হয়েছে। কাবুলে তার বাড়ির কাছে তার গাড়িতে বেঁধে রাখা বোমা বিস্ফোরিত হয়ে তিনি ও অন্য দু’জন নিহত হয়েছেন। রেডিও লিবার্টির রিপোর্টার আলিয়াস ডাইয়িকে নভেম্বরে লস্করগাঁতে গাড়িতে পেতে রাখা বোমা বিস্ফোরণে হত্যা করা হয়েছে। আফগানিস্তানের প্রথম নারী চলচ্চিত্র পরিচালক সাবা সাহার’কে কাবুলে গুলি করা হয়েছে। তবে তিনি এতে বেঁচে গেছেন।
Leave a Reply