রাজশাহীর বাগমারার মাওলানা তাজ উদ্দিন খাঁনকে স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে বিএনপি’র সুবর্ণ জয়ন্তী উদযাপন জাতীয় কমিটিতে সদস্য করায় বাগমারা উপজেলা বিএনপির নেতৃবৃন্দের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। তাদের মতে গোবিন্দপাড়া ইউনিয়নের করখন্ড দাখিল মাদ্রাসার সুপার মাওলানা তাজ উদ্দীন খাঁন একজন বিতর্কিত ব্যক্তি। তিনি ওলামা দলের নেতা হলেও তাঁর বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া সব গুলো মামলাই অনিয়ম ও দুর্নীতির মামলা। কোন রাজনৈতিক মামলা নেই।
জানা যায়, উপজেলার গোবিন্দপাড়া ইউনিয়নের করখন্ড দাখিল মাদ্রাসায় ৬৭ জন ভূয়া ছাত্রী দেখিয়ে ৭৬ হাজার টাকা আত্মসাতের অভিযোগে মামলা করেছিলেন করখন্ড গ্রামের আনিসার রহমান। ওই মামলায় তিনি দীর্ঘ দিন কারাগারে ছিলেন। পরবর্তীতে রাজশাহী জেলা দুর্নীতি দমন কমিশন (দু’দক) এর সহকারী পরিদর্শক মেফতাহুল জান্নাত বাদী হয়ে নিয়মিত মামলা দাখিল করেছিলেন।
অপর দিকে অন্যকে মা পাতিয়ে সৎ মায়ের জমি রেজিস্ট্রি করে নেয়ায় সৎ মা সখিনা বেওয়া তাঁর বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করেন।
এছাড়াও এমপির দেয়া বিশেষ বরাদ্দের পঁচিশ হাজার টাকা, চার টন গম, মাদ্রাসার সন্নিনিকটে পুকুর লিজের পঁয়তাল্লিশ হাজার টাকা, বাগান লিজের কুড়ি হাজার টাকা, ধর্মসভার ষাট হাজার টাকা, শিক্ষক নিয়োগের দুই লক্ষ পঞ্চাশ হাজার টাকা আত্মসাত করার অভিযোগও রয়েছে তার বিরুদ্ধে।
আত্মসাতের বিপরীতে একই গ্রামের বিশিষ্ট সমাজ সেবক মফিজ উদ্দীন কোর্টে মামলা দায়ের করেছিলেন। তখন বিতর্কিত মাওলানা তাজউদ্দীন খাঁনকে জড়িয়ে স্থানীয় ও জাতীয় পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশ হয়। এছাড়াও মাডিয়া গ্রামের মাষ্টার আব্দুর রশীদ, জালাল উদ্দীনসহ আরও কয়েক জন বিভিন্ন অভিযোগে তাঁর বিরুদ্ধে মামলা করেন।
ছাত্র অভিভাবক মরু খাঁন জানান, আমার ছেলের ২০২০ সনের ৫ম শেণির উপবৃত্তির পাঁচ হাজার টাকার পুরোটাই আত্মসাত করেছেন সহ-সুপার তাজ উদ্দীন খাঁন। করখন্ড দাখিল মাদ্রাসার সুপার রফিকুল ইসলাম খাঁনকে অবহিত করেও কোন প্রতিকার হয়নি। তিনি অন্যদের তিন হাজার টাকা দিলেও আমাকে এক হাজার টাকা দিতে চেয়েছিলেন।
এই বিষয়ে বিতর্কিত সুর্বণ জয়ন্তী উদযাপন কমিটির সদস্য মওলানা মোঃ তাজ উদ্দীন আহমেদের সাথে মুঠোফোন যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, এই কমিটি কেন্দ্র করেছে আমার কিছুই করার নেই। তার ব্যক্তিগত মামলা ব্যাপারে প্রশ্ন করা হলে তিনি জানান, আমার সব মামলায় আমি জামিনে রয়েছি।
বাগমারা উপজেলা বিএনপির আহবায়ক কমিটির সদস্য সচিব শামসুজ্জোহা সরকার বাদশা এক প্রতিক্রিয়ায় জানান, বাগমারা বিএনপিতে অনেক ত্যাগী ও ক্লিন ইমেজধারী লোক থাকতে বিতর্কিত ব্যক্তিকে সুবর্ণ জয়ন্তী উদযাপন জাতীয় কমিটিতে সদস্য করায় আমরা হতবাক হয়েছি।
বাগমারা উপজেলার নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অনেক নেতা কর্মীই বলেন, তিনি দুর্নীতি ও অর্থ-আত্মসাত করায় দুদক তাঁকে অভিযুক্ত করে চূড়ান্ত চার্জসীট দাখিল করেছেন। এরূপ বিতর্কিত ব্যক্তিকে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে পদ-পদবী দিতে চিন্তা ভাবনা করা উচিত ছিল।
বাগমারা উপজেলা বিএনপির দাবি অচিরেই এ ধরনের বিতর্কিত পদ -পদবিধারী ব্যক্তিকে পদ থেকে খুব শীঘ্রই অব্যহিত দেওয়া হোক।
সম্পাদনা: প্রশান্ত সুভাষ চন্দ, চীফ রিপোর্টার।
Leave a Reply