হাতে বিকল্প প্রার্থী প্রস্তুত থাকা ও বসুরহাট পৌর বিএনপির মতামতকে উপেক্ষা করে প্রার্থীতা প্রসঙ্গে অনীহা প্রকাশকারীকে মনোনয়ন দেয়ায় নির্বাচনী আমেজে ভাটার সৃষ্টি করেছে বিএনপি। যদিও মনোয়ন চুড়ান্ত করেছে কেন্দ্রীয় মহাসচিব। অনীহা থাকা সত্ত্বেও প্রার্থী দেয়ায় নির্বাচনের জন্য মানসিকভাবে অপ্রস্তুত বর্তমান প্রার্থীও গাছাড়া ভাব নিয়ে প্রচারণা চালাতে দেখা গেছে।
যেখানে আ’লীগ প্রার্থী প্রতিনিয়ত পথসভা, উঠান বৈঠক ও গণসংযোগের মাধ্যমে দলীয় নেতাকর্মীদের চাঙ্গা করার পাশাপাশি ভোটের মাঠে ব্যাপক সাড়া ফেলেছেন, সেখানে বিএনপি প্রার্থী স্বল্পসংখ্যক নেতাকর্মী নিয়ে লোক দেখানো নামমাত্র গণসংযোগের মধ্যেই সীমাবদ্ধ রয়েছেন।
সূত্রমতে, প্রাথমিক অবস্থায় বসুরহাট পৌর বিএনপি বর্ধিত সভা করে নেতাকর্মীদের মতামতের ভিত্তিতে পৌর বিএনপির অনুমোদনহীন কমিটির সভাপতি আব্দুল মতিন লিটনের নাম সর্বসম্মতিক্রমে ব্যারিষ্টার মওদুদ আহমদের কাছে প্রেরণ করে। কিন্তু অজ্ঞাত কারনে বিএনপির প্রবীন এ নেতা আব্দুল মতিন লিটনের নাম বাদ দিয়ে তাঁরই অনুগত ও বিশ্বস্ত উপজেলা বিএনপির অনুমোদনহীন কমিটির সভাপতি কামাল উদ্দিন চৌধুরীর নাম প্রস্তাব করার জন্য নির্দেশ প্রদান করেন।
প্রাথমিক প্রস্তাবনার পর ব্যারিষ্টার মওদুদ আহমদের কাছ থেকে সমর্থন না পেয়ে এবং উনার নির্দেশে বসুরহাট পৌর বিএনপির সভাপতি, সম্পাদক ও সাংগঠনিক সম্পাদক এবং জেলা কমিটির সভাপতি ও সম্পাদকসহ ৫ জনের প্রস্তাবনা অনুযায়ী কেন্দ্রীয় মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বিএনপির প্রার্থী হিসেবে কামাল উদ্দিন চৌধুরীকে মনোনয়ন দিয়েছেন বলে জানা গেছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক বিএনপি নেতা বলেন, আমাদের প্রার্থী মনোনয়ন পেলেও নির্বাচনের আগেই তিনি হেরে বসে আছেন। তিনি কারো সাথে সমন্বয় করছেননা। প্রচারণায়ও ছন্নছাড়া ভাব।
বিশ্বস্ত সূত্র মতে জানা গেছে, তফসীল ঘোষণার পূর্ব থেকেই কামাল উদ্দিন চৌধুরী নির্বাচনে প্রার্থী হওয়া প্রসঙ্গে অনীহা প্রকাশ করেছেন। তিনি এবারের নির্বাচনে প্রার্থী হবেননা বলে অনেকের কাছেই তাঁর ব্যক্তিগত অভিমত ব্যক্ত করেছিলেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিষ্টার মওদুদ আহমদের অনুরোধ ও নির্দেশে তিনি প্রার্থী হতে রাজী হন।
এদিকে প্রথম অবস্থায় কামাল উদ্দিন চৌধুরী প্রার্থী হবেননা এমন কথা জানার পর থেকে পৌরসভায় বিএনপি নেতাকর্মীরা তরুন ও জনপ্রিয় নেতা আব্দুল মতিন লিটনকে নিয়ে স্বপ্ন দেখতে শুরু করে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত কামাল উদ্দিন চৌধুরীকে প্রার্থী দেয়ায় তাদের সেই স্বপ্ন স্বপ্নই থেকে যায়। যার বিরূপ প্রভাব পড়ছে চলমান নির্বাচনী প্রচারণায়।
একদিকে জনপ্রিয় ও শক্ত প্রার্থীকে বাদ দিয়ে মনোনয়ন চুড়ান্ত করায় প্রার্থীতা নিয়ে মতানৈক্য সৃষ্টি অপর দিকে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যরিষ্টার মওদুদ আহমদ অনুসারী ও বিশিষ্ট শিল্পপতি আলহাজ্ব ফখরুল ইসলাম অনুসারীদের মধ্যে দলীয় কোন্দল নির্বাচনী প্রচারণায় ব্যাপক নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে বলে মনে করছেন অধিকাংশ বিএনপি সমর্থক।
তাদের মতে কামাল উদ্দিন চৌধুরীকে মনোনয়ন না দিয়ে যদি আব্দুল মতিন লিটনকে মনোনয়ন দেয়া হত, তাহলে নির্বাচনের আমেজ ও চিত্র উভয়ই পাল্টে যেত।
এ প্রসঙ্গ নিয়ে বিএনপি প্রার্থী কামাল উদ্দিন চৌধুরীর সাথে কথোপকথন:
চলমান সময় : শোনা যাচ্ছে নির্বাচনী প্রচারণায় আপনার ঘাটতি রয়েছে, সত্য কিনা?
কামাল উদ্দিন চৌধুরী : আমরা বিরোধী দল করি। আমাদের কাছে টাকা নেই, পয়সা নেই, পোষ্টার নেই, ব্যানার নেই। অতএব একটু ঘাটতিতো থাকবেই। তারপরও বলবো ভালোভাবেই চলছে আমাদের প্রচারণা।
চলমান সময় : সকলের সাথে সমন্বয় করা হচ্ছেনা বলে একটি অভিযোগ রয়েছে, এটি সত্য কিনা?
কামাল উদ্দিন চৌধুরী : এটি একেবারেই ভূয়া ও অসত্য কথা। বিএনপি, ছাত্রদল, যুবদল, স্বেচ্ছাসেবকদলসহ সকল অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা সমন্বয় করে ঐক্যবদ্ধ হয়ে প্রচারণায় অংশগ্রহন করছে।
চলমান সময় : প্রথম অবস্থায় প্রার্থীতা হওয়া বিষয়ে অনীহা প্রকাশ করেছিলেন, এ কথা কতটুকু সত্য?
কামাল উদ্দিন চৌধুরী : অনীহা ছিল সত্য। তারপরও যেহেতু দল করি, দলের তৃণমূল নেতাকর্মীদের চাহিদা ও হাইকমান্ডের সিদ্ধান্তের কারনে নির্বাচন করছি।
চলমান সময় : আপনি জয়ের ব্যাপারে কতটুকু আশাবাদী?
কামাল উদ্দিন চৌধুরী : এবারের নির্বাচন ইভিএমএর মাধ্যমে অনুষ্ঠিত হবে। যদি মেশিন ঠিক থাকে এবং আমরা যদি কেন্দ্রে ভোটার আনতে পারি এবং সুষ্ঠ নির্বাচন হয়, তাহলে ইনশাল্লাহ জয়ের ব্যাপারে শতভাগ আশাবাদী।
Leave a Reply