তৌহিদুল আলম মিল্কী। বাংলাদেশের ভ্রমণ জগতে যিনি রঙিন আভা ছড়িয়ে দিচ্ছেন। তাঁর পরিচয় কেবল ব্যাবসায়িক সাফল্যে সীমাবদ্ধ নয়; তিনি পথিকের অন্তরে জাগিয়ে তুলছেন অভিযাত্রার আলো। অনেকের কাছে তিনি এক অদৃশ্য সহযাত্রী, যিনি গন্তব্য খুঁজে দেন, আবার সেই গন্তব্যকে ঘিরে বুনে দেন কল্পনার রঙিন চিত্রপট। মিল্কী যেন শুধু ভ্রমণ আয়োজন করেন না, বরং যাত্রাকে পরিণত করেন এক অনন্য অভিজ্ঞতার গল্পে।
তার গড়া প্রতিষ্ঠানের নাম ‘আকাশ বাড়ি হলিডেজ’ তাঁর শুরুটা ছিল সাদামাটা। ঢাকার বনানীতে ছোট্ট পরিসরে ভ্রমণ পরিকল্পনা নিয়ে পথচলা শুরু করেন মিল্কী। তবে তাঁর দৃষ্টি ছিল সুদূরপ্রসারী। ফলে খুব অল্প সময়ের মধ্যেই আলোচনায় চলে আসেন তিনি। তাঁর প্রতিষ্ঠানের উদ্যোগে প্রথম ট্যুর ছিল সিঙ্গাপুর। অল্প খরচে ১৭ জনের একটি গ্রুপকে নিয়ে ওই দেশে ভ্রমণ করেন তিনি। এরপর মালদ্বীপ কিংবা শ্রীলঙ্কা ভ্রমণের সুযোগ দেখিয়ে তিনি প্রমাণ করেন— ট্রাভেল মানেই শুধু ধনীদের স্বপ্ন নয়; সঠিক কৌশল ও পরিকল্পনায় সাধারণ মানুষও সহজেই পৃথিবী ঘুরতে পারে। এভাবেই তিনি নজর কাড়তে সক্ষম হন ভ্রমণ পিপাসুদের।
এ পর্যন্ত তাঁর প্রতিষ্ঠান থেকে পৃথিবীর ৬০টি দেশে প্রায় ১০ লাখ ভ্রমণপিপাসুদের ভ্রমণ করিয়েছেন।
বর্তমানে ‘আকাশ বাড়ি হলিডেজ’ নামটি বাংলাদেশে ভ্রমণপ্রেমীদের কাছে আস্থার প্রতীক হয়ে উঠেছে। ভ্রমণ সেবার পাশাপাশি তিনি কর্মসংস্থানের নতুন দিগন্তও খুলে দিয়েছেন। যেখানে অসংখ্য তরুণ নিজেদের ভবিষ্যৎ গড়ার সুযোগ পাচ্ছে।
মিল্কীর আরেকটি উদ্যোগ হলো বিদেশে পড়াশোনার স্বপ্ন দেখা শিক্ষার্থীদের সহায়তা করা। খুব সামান্য খরচে ভিসা প্রসেসিং, ডকুমেন্টেশন, টিকিট বুকিংসহ সব ধরনের সমন্বয় করে দেন তিনি। যে-সব শিক্ষার্থী একা এসব প্রক্রিয়া সামলাতে ভয় পান, তাদের জন্য তিনি হয়ে ওঠেন এক বিশ্বস্ত অভিভাবক।
তিনি দেখিয়ে দিয়েছেন, ইচ্ছাশক্তি ও সাহস থাকলে পর্যটন কেবল কল্পনা নয়, বাস্তবায়নও সম্ভব। আর তার এই সাফল্যের পেছনে রয়েছে নিরন্তর সৃজনশীলতা, অকৃত্রিম ভালোবাসা এবং মানুষের প্রতি গভীর দায়বদ্ধতা।
ভ্রমণের দুনিয়ায় তৌহিদুল আলম মিল্কী এখন অনেকের কাছে পরিচিত এক নাম। কারও কাছে তিনি গাইড, কারও কাছে অনুপ্রেরণা, তবে অধিকাংশের চোখে তিনি সত্যিকারের ‘ভ্রমণ সঙ্গী’। তার লক্ষ্য শুধু প্যাকেজ বিক্রি নয়; বরং মানুষকে স্বস্তি, আনন্দ আর সহজে পাওয়া ভ্রমণের স্বাদ দেওয়া।
বিশ্ব পর্যটন দিবস কে সামনে রেখে তার স্বপ্ন হলো, বাংলাদেশের প্রতিটি সাধারণ পরিবার যেন সীমিত বাজেটেও নিরাপদ ও আনন্দঘন ভ্রমণের সুযোগ পায়, ভ্রমণ যেন বিলাসিতা নয়, বরং সবার অধিকার হয়ে ওঠে। সে ব্যবস্থা করা।
চলমান সময়/২৯সেপ্টেম্বর/পিএস



