নিজস্ব প্রতিবেদক, চলমান সময়
আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে দেশের রাজনীতিতে শুরু হয়েছে জমজমাট হিসাব-নিকাশ। বাদ যাচ্ছে না নোয়াখালীও। ইতোমধ্যে রাজনৈতিক উত্তেজনার কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠেছে নোয়াখালী-৫ আসনটি। মনোনয়ন প্রদানে ভুল পদক্ষেপ নিলে হাত ছাড়া হতে পারে আসনটি।
নোয়াখালী-৫ আসনে শিল্পপতি মো. ফখরুল ইসলাম, সাবেক ছাত্রনেতা বজলুল করিম চৌধুরী আবেদ ও বিএনপির স্থায়ী কমিটির প্রয়াত নেতা ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদের সহধর্মীনি বেগম হাসনা জসিম উদ্দিন মওদুদ মনোনয়ন প্রত্যাশী হিসেবে কাজ করছেন।
আসনটিতে শিল্পপতি মো. ফখরুল ইসলাম মনোনয়ন পেতে যাচ্ছেন দলীয় বিশ্বস্ত একটি সূত্র এটি জানালেও লন্ডন থেকে কী বার্তা আসে তা দেখার জন্য শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত তারা অপেক্ষা করতে চান।
এদিকে আসনটির অন্তর্ভুক্ত কোম্পানীগঞ্জ ও কবিরহাট উপজেলা বিএনপির নেতাকর্মীদের মতে, এই আসনে মনোনয়ন নিয়ে ভুল সিদ্ধান্ত নিলে বড় ধরনের ধাক্কা খেতে পারে বিএনপি।
তাদের মতে, গত সতেরো বছর ধরে বিএনপি ক্ষমতার বাইরে। এই দীর্ঘ সময়ে দলে বহু নেতা মামলা-হামলায় জর্জরিত হয়ে যখন নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়েছিলেন। ঠিক তখনই দৃঢ়ভাবে মাঠে ছিলেন শিল্পপতি মোহাম্মদ ফখরুল ইসলাম। তিনি শুধু মামলা মোকদ্দমায় পাশে ছিলেন না, বরং নেতাকর্মীদের মনোবল ধরে রাখতে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছেন। ত্যাগ, সাহস, ঐক্য প্রতিষ্ঠা এবং ব্যক্তিগত খরচে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে যুক্ত থেকেছেন নিয়মিত।
স্থানীয় নেতাকর্মীদের ভাষ্য, মোহাম্মদ ফখরুল ইসলামই এখন পর্যন্ত দলের মধ্যে সবচেয়ে যোগ্য, ত্যাগী ও ক্লিন ইমেজের নেতা, যিনি আসন্ন নির্বাচনে আওয়ামী লীগের বিপরীতে শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারবেন। তাদের মতে কোনো কারনে যদি আওয়ামী লীগ নির্বাচন করার সুযোগ পায়, তাহলে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী হতে পারেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের অথবা নোয়াখালী-৪ আসনের সাবেক এমপি একরামুল করিম চৌধুরী। তখন একজন আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী ও জনপ্রিয় প্রার্থীর বিকল্প নেই।
তারা আরও বলেন, ক্ষমতাসীন দলের রয়েছে সংগঠিত ভোটব্যাংক এবং বিপুল অর্থনৈতিক প্রভাব। এমন পরিস্থিতিতে মাঠ পর্যায়ের শক্তি, নেতা-কর্মীদের অভ্যন্তরীণ ঐক্য ও অর্থনৈতিক সক্ষমতা ছাড়া টিকে থাকা কঠিন। সেই জায়গা থেকেই মোহাম্মদ ফখরুল ইসলামের প্রয়োজনীয়তা এখন সময়ের দাবি।
তবে শঙ্কা রয়েছে, হাইকমান্ড যদি স্থানীয় বাস্তবতা বিবেচনা না করে আনকোরা বা নতুন কাউকে মনোনয়ন দেয়, তাহলে তা নেতাকর্মীদের মানসিকতা ভেঙে যেতে পারে। এতে করে নোয়াখালী-৫ আসনটি আবারও হাতছাড়া হয়ে যেতে পারে। এতে সুযোগটি সামনে চলে আসতে পারে জামায়াত ইসলামীর প্রার্থী বা আওয়ামী লীগ প্রার্থীর হাতে।
উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সাবেক সদস্য আফতাব আহমেদ বাচ্চু বলেন, সময় এসেছে সঠিক সিদ্ধান্ত নেওয়ার। রাজনৈতিক অভিজ্ঞতা, মাঠে সক্রিয়তা ও জনসম্পৃক্ততা বিবেচনায় মোহাম্মদ ফখরুল ইসলামকেই মনোনয়ন দিয়ে দলকে শক্ত অবস্থানে রাখার আহ্বান জানিয়েছেন অভিজ্ঞ এ বিএনপি নেতা।
উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক আনিসুল হক বলেন, মনোনয়নে ভুল সিদ্ধান্ত মানেই আসন হারানোর ঝুঁকি। তাই সময় থাকতে সঠিক নেতৃত্বকে মূল্যায়ন করাই হবে বিএনপির জন্য বুদ্ধিমানের কাজ।
চলমান সময়/১৮জুন/পিএস