7.3 C
New York
Monday, October 27, 2025

ট্রাম্পের সঙ্গে সম্পর্কের ভাঙন, ইলন মাস্ক ‘আমেরিকা পার্টি’ গঠনের ঘোষণা

রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং তার প্রধান নির্বাচনী অর্থদাতা ইলন মাস্কের মধ্যে টালমাটাল সম্পর্ক আরও ভাঙনের দিকে। যুক্তরাষ্ট্রে নতুন একটি রাজনৈতিক দল গঠন করার ঘোষণা দিয়েছেন টেসলা ও স্পেসএক্সের প্রধান ইলন মাস্ক। দলটির নাম দিয়েছেন ‘আমেরিকা পার্টি’।

শনিবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে (সাবেক টুইটার) দেওয়া এক পোস্টে তিনি এ ঘোষণা দেন। তিনি বলেন, ট্রাম্পের “বড়, সুন্দর” কর-বিল আমেরিকাকে দেউলিয়া করে দেবে। “আজ আমেরিকা পার্টি গঠিত হয়েছে, আপনাদের স্বাধীনতা ফিরিয়ে দিতে।” তিনি আরো লিখেন, “২:১ হারে আপনারা একটি নতুন রাজনৈতিক দল চেয়েছেন, আর সেটা আপনারা পাবেন!”

মাস্কের এই ঘোষণা আসে একদিন পরই, যখন ট্রাম্প তার নিজস্বভাবে তৈরি করা “বড়, সুন্দর” কর-কাট এবং ব্যয়ের বিল আইনে স্বাক্ষর করেন, যার কড়া বিরোধিতা করেছেন মাস্ক।

টেসলা ও স্পেসএক্সের মাধ্যমে বিশ্বের শীর্ষ ধনী হওয়া মাস্ক ট্রাম্পের পুনর্নির্বাচনে শত শত মিলিয়ন ডলার খরচ করেছেন এবং প্রেসিডেন্টের দ্বিতীয় মেয়াদের শুরু থেকেই সরকারের ব্যয় কমাতে একটি বিভাগ পরিচালনা করেছেন—”ডিপার্টমেন্ট অব গভর্নমেন্ট এফিসিয়েন্সি”।

তবে এই বিলকে কেন্দ্র করে তাদের মধ্যে সম্পর্কের মারাত্মক অবনতি ঘটে।

ইলন মাস্ক আগেই বলেছিলেন, তিনি একটি নতুন রাজনৈতিক দল গঠন করবেন এবং যারা এই বিলকে সমর্থন করেছেন, তাদের পদচ্যুত করতে অর্থ ব্যয় করবেন।

এই সপ্তাহের শুরুতে ট্রাম্প হুমকি দেন, মাস্কের কোম্পানিগুলো ফেডারেল সরকার থেকে যে বিলিয়ন ডলার ভর্তুকি পায়, তা বন্ধ করে দেবেন।

রিপাবলিকানরা উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন, মাস্ক ও ট্রাম্পের এই অন-অফ বিবাদ ২০২৬ সালের মধ্যবর্তী কংগ্রেস নির্বাচনে সংখ্যাগরিষ্ঠতা ধরে রাখার ক্ষেত্রে সমস্যা তৈরি করতে পারে।

এক্স-এ এক অনুসারীর প্রশ্ন, কী কারণে তিনি ট্রাম্পের প্রতি ভালোবাসা থেকে সমালোচনায় চলে গেলেন—এর উত্তরে মাস্ক বলেন, “বাইডেনের অধীনে আগেই পাগলাটে ২ ট্রিলিয়ন ডলারের ঘাটতি ছিল, সেটা বাড়িয়ে ২.৫ ট্রিলিয়নে নিয়ে যাওয়া। এতে দেশ দেউলিয়া হয়ে যাবে।”

অন্য এক টুইটে মাস্ক প্রাচীন গ্রিসের কথা উল্লেখ করে বলেন, “আমরা যেভাবে ইউনিপার্টি (দুই দলের একতরফা রাজনীতি) ভাঙবো, সেটা হবে স্পার্টার অজেয় ভাবমূর্তি যেভাবে লিউকট্রার যুদ্ধে এপামিনন্ডাস ধ্বংস করেছিলেন, তারই একটি রূপ ব্যবহার করে: নির্দিষ্ট একটি স্থানে চূড়ান্ত শক্তি প্রয়োগ করে।”

ট্রাম্প বা হোয়াইট হাউসের পক্ষ থেকে মাস্কের এই ঘোষণার বিষয়ে এখনো কোনো মন্তব্য আসেনি।

বিশ্বের সবচেয়ে ধনী ও সবচেয়ে ক্ষমতাধর ব্যক্তি হিসেবে পরিচিত এই দুই ব্যক্তির দ্বন্দ্ব টেসলার শেয়ার দরে ব্যাপক পতন ঘটিয়েছে।

ট্রাম্পের নভেম্বরে পুনর্নির্বাচনের পর টেসলার শেয়ার মূল্য বেড়ে ডিসেম্বরের মধ্যে ৪৮৮ ডলার ছাড়িয়ে যায়। তবে এপ্রিলের মধ্যে তা অর্ধেকে নেমে আসে এবং গত সপ্তাহের শেষে তা দাঁড়ায় ৩১৫.৩৫ ডলারে।

তবে মাস্ক যতই ধনী হোন না কেন, রিপাবলিকান-ডেমোক্র্যাট দ্বৈত-প্রভাব ভেঙে ফেলা সহজ কাজ নয়। এই দুই দলের আধিপত্য ১৬০ বছরেরও বেশি সময় ধরে আমেরিকার রাজনৈতিক জীবন নিয়ন্ত্রণ করছে। আর ট্রাম্পের দ্বিতীয় মেয়াদে জনমত সমর্থন প্রায়ই ৪০ শতাংশের ওপরে থেকেছে, যদিও তার নীতিগুলো অনেক সময়ই বিভাজন সৃষ্টিকারী।

চলমান সময়/৬জুলাই/পিএস

Related Articles

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

যোগাযোগ রেখো

0FansLike
0FollowersFollow
0SubscribersSubscribe
- Advertisement -spot_img

এ সম্পর্কিত খবর